চিকেন রেজালা রেঁধে তাক লাগালেন গ্ৰামের গৃহবধূ : রন্ধন প্রতিযোগিতা শীতের আবহে

3rd January 2021 7:26 pm বর্ধমান
চিকেন রেজালা রেঁধে তাক লাগালেন গ্ৰামের গৃহবধূ : রন্ধন প্রতিযোগিতা শীতের আবহে


প্রদীপ চট্টোপাধ‍্যায় ( জামালপুর ) :  শ্বশুর বাড়িতে রন্ধনে পটীয়সী বধূরা আলাদা কদর পেয়ে থাকেন ঠিকই। তবে সাধ থাকলেও  পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বধূরা  জনসমক্ষে তাঁদের রন্ধন পটীয়সী আনার প্রকাশ ঘটানোর সূযোগ পাচ্ছিলেন না। বধূদের সেই ইচ্ছে পূরণ করলো ‘ইচ্ছে’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ।তাদের পৌরহিত্যেই রবিবার হল চুড়ান্ত পর্বের রন্ধন প্রতিযোগীতা । সেই প্রতিযোগীতা স্থলেই রন্ধনের মেল বন্ধনে একাকার হয়ে গেলেন গৃহীনিরা। নতুন বছরে প্রথম রবিবার কোভিড আতঙ্ক দূরে সরিয়ে রেখে গৃহীনিদের এই রন্ধন প্রতিযোগীতার আসর ঘিরেই জামালপুরবাসী  উৎসব মুখর হলেন । পরিবেশ রক্ষা সহ দুঃস্থ মানুষজনের পাশে দাঁড়ানোর শপথ নিয়ে জামালপুরের একদল  শিক্ষক ও তাঁদের ছাত্র-ছাত্রীরা মিলে গড়ে তোলেন ‘ইচ্ছে’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন । সামাজিক ক্ষেত্রে নানা কাজকর্ম করার পাশাপাশি তারা জামালপুরের গৃহিনীদের জন্য  কিছু একটা করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন ।  সেই অনুযায়ী তারা গৃহিনীদের জন্য রন্ধন প্রতিযোগীতার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেন । আর এমন প্রতিযোগীতার আয়োজন সাড়া ফেলে দেয় জামালপুরের গৃহিনী মহলে ।  ইচ্ছে ’স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি প্রসেনজিৎ ঘোষ ও সহ-সভাপতি অনিমেষ দত্ত  বলেন , একমাস আগে ১০০ জন প্রতিযোগীকে  নিয়ে জামালপুরের কালিতলা এলাকায় রন্ধন প্রতিযোগীতার  প্রাথমিক পর্ব শুরু হয় । প্রতি রবিবার প্রতিযোগীতার এক একটি পর্ব সমাপ্ত শেষে চুড়ান্ত পর্বে  পৌছান ১১ জন গৃহিনী ও ১ জন গৃহকর্তা । তারা ৩  জানুয়ারি রবিবার চুড়ান্ত পর্বের রন্ধন প্রতিযোগীতায় অংশ নেন । প্রতিযোগীদের তৈরি করা খাবারের মান ও স্বাদ  বিচারের জন্য প্রতিযোগীতা স্থানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা ও বর্ধমান মিলিয়ে তিনটি নামি হোটেল - রেস্তোরাঁর ’শেফ’। ফাইনাল প্রতিযোগীতায় মধুছন্দা দাস অসম্ভব সাধের 
‘চিকেনা রেজালা’  তৈরি করে সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নেন । জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান ট্রফি ও পুরস্কার মধুছন্দা দেবীর হাতে তুলে দেন । বহু মহিলা দর্শক করতালি দিয়ে এদিন প্রতিযোগীতার আয়োজকদের স্বাগত জানান ।  পুরস্কার হাতে নিয়ে মধুছন্দাদেবী এদিন বলেন ,“এতদিন দেখে এসেছি কলকাতায় গৃহিনীদের জন্য রন্ধন প্রতিযোগীতার আয়োজন হত । সেখানে গিয়ে প্রতিযোগীতায় অংশ নেবার শখ ছিল । কিন্তু তা সম্ভব হয়নি । 
জামালপুরের ‘ইচ্ছে ’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ব্যবস্থাপনায় হওয়া রন্ধন প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে পেরে সেই শখ পূরণ হল । মধুছন্দাদেবী জানান  , বিয়ের পর থেকে নিজের হাতে ভ্যারাইটিস খাবার রান্না করে খাইয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে তৃপ্ত করেছেন । শ্বশুর বাড়ির সবাই তাঁর রান্নার তারিফ করতেন । এদিন রন্ধন প্রতিযোগীতায় সেরা নির্বাচিত হয়ে  রন্ধন পটীয়সী আনার স্বীকৃতি পেয়ে গর্বিত বোধ করছেন  বলে মধুছন্দাদেবী জানিয়েছেন । “প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনকারী  অপর দুই গৃহিনী মহসিনা বেগম ও রেশমা বসু বলেন, এমন রন্ধন প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে পেরে তাঁরাও আপ্লুত । গ্রামীন এলাকায় এমন রন্ধন প্রতিযোগীতা আয়োজনের ভাবনাটাই অনবদ্য । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।